পশ্চিমবঙ্গের ঝার গ্রামে আবারও দেখা দিয়েছে বাঘের আতঙ্ক। সম্প্রতি স্থানীয় বাসিন্দারা বাঘের পায়ের ছাপ, দাগ ও চলাফেরার চিহ্ন দেখতে পেয়েছেন, যা গ্রামবাসীদের মধ্যে চরম উৎকণ্ঠার সৃষ্টি করেছে।
রাতে বেড়েছে বাঘের চলাফেরা
গত কয়েকদিনে বিশেষ করে রাতের বেলা বাঘের উপস্থিতি বাড়তে দেখা গেছে। এতে করে গ্রামবাসীরা রাতের সময় ঘরের বাইরে যেতে ভয় পাচ্ছেন। কৃষক থেকে শুরু করে গ্রামীণ মহিলারা সবাই নিজেদের নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বিগ্ন। অনেক পরিবার ছোট শিশুদের রাতে বাইরে যেতে দিচ্ছেন না।
READ MORE: শীতকালে তৎকাল টিকিটে নিশ্চিত আসন কীভাবে পাবেন? জেনে নিন সহজ নিয়মগুলো
এক স্থানীয় কৃষক বলেন, “রাতে ফসল দেখতে খেতের দিকে যেতে ভয় পাচ্ছি। বাঘের চলাফেরা আমাদের সবার জীবনে আতঙ্কের ছাপ ফেলেছে।”
বাঘের উপস্থিতির কারণ কী?
বনদপ্তরের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, নিকটবর্তী বনাঞ্চল থেকে বাঘটি খাবারের সন্ধানে গ্রামে চলে এসেছে। বনে শিকার সংকট কিংবা বাস্তুতন্ত্রে পরিবর্তনের কারণে এমন ঘটনা ঘটতে পারে।
বনদপ্তর আরও জানিয়েছে, এই ঘটনা খুব অস্বাভাবিক নয়। খাদ্যের অভাব বা শিকারীদের চাপের কারণে বাঘ কখনো কখনো গ্রামের দিকে চলে আসে। তবে স্থানীয়রা যাতে ক্ষতিগ্রস্ত না হয়, সে ব্যাপারে বিশেষ ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।
গ্রামবাসীদের জন্য সতর্কবার্তা
ঝার গ্রামের মানুষদের আতঙ্কিত না হয়ে সতর্ক থাকতে বলেছে বনদপ্তর। তাদের নির্দেশনা অনুযায়ী:
- রাতে বাইরে একা না বের হওয়া।
- ঘরের আশপাশে আলো জ্বালানো।
- পশু-পাখি বাইরে না রেখে তাদের ঘরের ভেতরে রাখা।
- সন্দেহজনক গতিবিধি দেখলে সঙ্গে সঙ্গে স্থানীয় প্রশাসনকে জানানো।
প্রশাসনের তৎপরতা
বাঘটির গতিবিধি ট্র্যাক করতে বনদপ্তর এবং স্থানীয় প্রশাসন একযোগে কাজ করছে। বাঘ ধরার জন্য বিশেষজ্ঞ দল গ্রামে মোতায়েন করা হয়েছে। পাশাপাশি ড্রোন এবং ক্যামেরার মাধ্যমে বাঘের চলাফেরা নজরে রাখা হচ্ছে।
READ MORE: IRCTC: বিনামূল্যে খাবার দেবে ইন্ডিয়ান রেলওয়ে, কারা পাবেন এই বিশেষ সুবিধা?
পুলিশ ও বনদপ্তর যৌথভাবে গ্রামবাসীদের সচেতন করতে প্রচার চালাচ্ছে এবং জরুরি প্রয়োজনে হেল্পলাইন নম্বর সরবরাহ করা হয়েছে।
ঝার গ্রামবাসীদের প্রতিক্রিয়া
গ্রামের এক মহিলা বলেন, “আমাদের বাচ্চাদের নিয়ে খুব ভয় পাচ্ছি। আমরা জানি না বাঘটা কখন কোথায় আক্রমণ করতে পারে। এই অবস্থায় বেঁচে থাকা খুব কঠিন হয়ে যাচ্ছে।”
স্থানীয় একটি স্কুলের প্রধান শিক্ষক জানান, বাঘের আতঙ্কে স্কুলে উপস্থিতি অনেক কমে গেছে। অভিভাবকেরা সন্তানদের বাড়ির বাইরে পাঠাতে ভয় পাচ্ছেন।
বাঘ ধরার সম্ভাবনা
বনদপ্তরের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, বাঘটিকে নিরাপদে ধরার চেষ্টা চলছে। ধরা পড়ার পর সেটিকে পুনরায় তার প্রাকৃতিক আবাসস্থলে ফিরিয়ে দেওয়া হবে।
READ MORE: Khadaan-Box-office Day 1: রাত ২টায় প্রথম শো হাউজফুল, দেবের ঝড় বক্স অফিসে!
ঝার গ্রামে বাঘের আতঙ্ক গ্রামবাসীদের জীবনযাত্রাকে প্রভাবিত করছে। তবে প্রশাসনের সঠিক তৎপরতা এবং গ্রামবাসীদের সহযোগিতার মাধ্যমে এই সমস্যার দ্রুত সমাধান সম্ভব হবে বলে মনে করা হচ্ছে।