Last Updated on December 28, 2024 by Santwanu
পশ্চিমবঙ্গের জঙ্গলমহল একসময় বাঘের জন্য বিখ্যাত ছিল, কিন্তু সময়ের সঙ্গে সঙ্গে তাদের অস্তিত্ব হারিয়ে যেতে বসেছিল। সম্প্রতি পুরুলিয়ার মানববাজার অঞ্চলে বাঘের উপস্থিতি প্রমাণিত হওয়ার পর, সেটি মুকুটমণিপুরের দিকে অগ্রসর হয়েছে বলে অনুমান করা হচ্ছে। এই ঘটনা শুধুমাত্র জীববৈচিত্র্যের জন্য নয়, স্থানীয় বাসিন্দা এবং পর্যটকদের জন্যও রোমাঞ্চকর।
বাঘের উপস্থিতি প্রকৃতির ভারসাম্যের প্রতীক
জঙ্গলে বাঘের উপস্থিতি পরিবেশের ভারসাম্যের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। বাঘ সাধারণত খাদ্যশৃঙ্খলার শীর্ষে থাকে এবং তার উপস্থিতি একটি এলাকার জীববৈচিত্র্যের মান নির্ধারণ করে। পুরুলিয়া, বাঁকুড়া এবং সংলগ্ন জঙ্গলমহল একসময় বাঘের প্রিয় আবাসস্থল ছিল। এই অঞ্চলে বাঘের প্রত্যাবর্তন প্রকৃতির পুনর্জাগরণ এবং জীববৈচিত্র্য রক্ষার দিক থেকে অত্যন্ত ইতিবাচক।
মানবাজারে বাঘের দেখা
পুরুলিয়ার মানববাজারে প্রথমবারের মতো বাঘের চিহ্ন পাওয়া যায়, যা গ্রামবাসীদের মধ্যে কৌতূহল এবং উত্তেজনা সৃষ্টি করে। বাঘের পায়ের ছাপ এবং ক্ষতিগ্রস্ত পোষা প্রাণীর প্রমাণ পাওয়ার পর বন দপ্তর দ্রুত পদক্ষেপ নেয়। ক্যামেরা ট্র্যাপ বসানো এবং ড্রোনের মাধ্যমে বাঘের গতিবিধি অনুসরণ করা হয়।
মুকুটমণিপুর: বাঘের নতুন সম্ভাব্য আশ্রয়স্থল
মুকুটমণিপুর তার প্রাকৃতিক সৌন্দর্য, জলাধার এবং ঘন জঙ্গলের জন্য বিখ্যাত। এই অঞ্চলটি বাঘের জন্য একটি আদর্শ বাসস্থান হতে পারে। বাঘের উপস্থিতি এই অঞ্চলটিকে জীববৈচিত্র্যের নতুন কেন্দ্রে পরিণত করতে পারে, যা পর্যটন শিল্পের জন্যও আশীর্বাদ হতে পারে।
স্থানীয় বাসিন্দাদের জন্য সতর্কতা
বাঘ সাধারণত মানুষের উপর আক্রমণ করে না, তবে যদি প্রাণীটি বিপন্ন বোধ করে, তখন এটি বিপজ্জনক হতে পারে। তাই স্থানীয় প্রশাসন এবং বন দপ্তর গ্রামবাসীদের বাড়ির বাইরে অপ্রয়োজনীয় চলাফেরা এড়ানোর পরামর্শ দিয়েছে। এছাড়াও, পোষা প্রাণীগুলিকে নিরাপদ স্থানে রাখার জন্য নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
পর্যটকদের জন্য আকর্ষণ
মুকুটমণিপুর এমনিতেই একটি জনপ্রিয় পর্যটন কেন্দ্র। বাঘের উপস্থিতির খবর এই অঞ্চলে পর্যটকদের আকর্ষণ আরও বাড়িয়েছে। তবে বাঘের সুরক্ষার কথা মাথায় রেখে বন দপ্তর পর্যটকদের চলাচল নিয়ন্ত্রণে রাখার জন্য বিশেষ পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে।
বন দপ্তরের উদ্যোগ
বাঘের সুরক্ষার জন্য বন দপ্তর ও প্রশাসন বিশেষ নজরদারি চালাচ্ছে। ড্রোন এবং ক্যামেরা ট্র্যাপের মাধ্যমে বাঘের অবস্থান নির্ধারণ করা হচ্ছে। বাঘকে তার প্রাকৃতিক বাসস্থানে ফিরিয়ে দেওয়ার জন্য একটি সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনাও তৈরি করা হয়েছে।