Last Updated on February 10, 2025 by কর্মসংস্থান ব্যুরো
জনপ্রিয় ইউটিউবার এবং পডকাস্টার রানবীর আল্লাবাদিয়া, যিনি বিয়ারবাইসেপস (BeerBiceps) নামে পরিচিত, সম্প্রতি একটি বিতর্কিত মন্তব্যের কারণে ব্যাপক সমালোচনার মুখে পড়েছেন। রানবীর তার ‘ইন্ডিয়ার গট লেটেন্ট’ শোতে এক অশ্লীল প্রশ্ন করে সমালোচনার ঝড় তুলে দেন। কমেডিয়ান সময় রায়নার সঙ্গে শোটির একটি পর্বে তিনি একটি প্রশ্ন করেন, “আপনি কী আপনার মা-বাবাকে প্রতিদিন সেক্স করতে দেখতে চান, নাকি একবার যোগদান করে সেটা চিরকাল বন্ধ করবেন?”
এই মন্তব্যের পর, শোটির ভিডিও ক্লিপ সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়লে তা দ্রুত নেটিজেনদের মধ্যে তীব্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করে। অনেকেই রানবীর আল্লাবাদিয়াকে অশ্লীল, অবমাননাকর এবং অবজ্ঞাসূচক মন্তব্যের জন্য তীব্রভাবে সমালোচনা করেন। সেই সঙ্গে, এই মন্তব্যের প্রতিবাদে মুম্বাই পুলিশ এবং জাতীয় মহিলা কমিশনে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ দায়ের করা হয়।
ঘটনার পর, মুম্বাই পুলিশ দ্রুত পদক্ষেপ নিয়ে “ইন্ডিয়ার গট লেটেন্ট” শোটির শুটিং হওয়া খার স্টুডিওতে তদন্ত করতে পৌঁছায়। পুলিশ শোটির নির্মাতাদের এবং সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য কাজ শুরু করে। এই অভিযানের মাধ্যমে পুলিশের লক্ষ্য হলো, রানবীর এবং শোটির অন্যান্য নির্মাতাদের বিরুদ্ধে উপযুক্ত আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করা।
বিতর্কের পর, রানবীর আল্লাবাদিয়া সোশ্যাল মিডিয়ায় একটি ভিডিও পোস্ট করে তার মন্তব্যের জন্য দুঃখ প্রকাশ করেন। তিনি বলেন, “আমার মন্তব্যটি হাস্যকর ছিল না এবং আমি আন্তরিকভাবে দুঃখিত।” যদিও এটি তার সমালোচকদের মন শান্ত করতে পারছে না, তবুও তার প্রকাশিত ক্ষমা প্রার্থনা এটি একটি নির্দিষ্ট মাত্রায় দায়িত্ব গ্রহণের সংকেত।
এদিকে, এক সামাজিক কর্মী মুম্বাইয়ের বান্দ্রা ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে একটি আবেদন করেন, যেখানে রানবীর আল্লাবাদিয়া, সময় রায়না এবং শোটির অন্যান্য প্রযোজকদের বিরুদ্ধে অশ্লীলতা ছড়ানোর অভিযোগ আনা হয়েছে। এর পাশাপাশি, আদালত শোটির সিসিটিভি ফুটেজ পরীক্ষা করারও নির্দেশ দিয়েছে, যাতে এই বিতর্কিত মন্তব্যের প্রেক্ষাপট এবং শো নির্মাতাদের ভূমিকা স্পষ্ট করা যায়।
এই বিতর্কটি এখন শুধু সোশ্যাল মিডিয়া পর্যন্ত সীমাবদ্ধ নেই, বরং রাজনীতিতেও প্রবেশ করেছে। শিবসেনা (ইউবিটি) দলের সংসদ সদস্য প্রিয়াঙ্কা চতুর্বেদী মন্তব্য করেছেন যে তিনি এই বিষয়টি সংসদে উত্থাপন করবেন। তিনি বলেন, “মুক্ত মতামত প্রকাশের স্বাধীনতার সঙ্গে আমাদের কিছু দায়িত্বও রয়েছে।”
এছাড়া, সোশ্যাল মিডিয়ায় অনেকেই দাবি করছেন যে রানবীর তার বিতর্কিত মন্তব্যটি অন্য একটি পুরনো শো থেকে নকল করেছেন। নেটিজেনদের মতে, এটি কোনো ভুল মন্তব্য ছিল না, বরং একটি পরিকল্পিত কৌতুক। এই অভিযোগে আরও বাড়ানো হয় বিতর্কের মাত্রা।
এই কন্ট্রোভার্সি সমাজের সামনে এক বড় প্রশ্ন রেখে গেছে – বিনোদনের মধ্যে কোনো সীমা থাকা উচিত কি না? নেটিজেনরা মনে করছেন, জনপ্রিয়তার জন্য যদি কোনো কিছুর মূল্য দিতে হয়, তবে সেই বিনোদন অবশ্যই সামাজিক শিষ্টাচার ও শ্রদ্ধার মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকা উচিত।
এই কন্ট্রোভার্সি শুধুমাত্র ভারতীয় বিনোদন জগতে নয়, বরং আন্তর্জাতিক স্তরেও আলোচিত হতে শুরু করেছে। বিশ্বব্যাপী এই ধরনের মন্তব্য এবং কৌতুকের সীমা নিয়ে অনেকেই মতামত প্রদান করছেন, যা ভবিষ্যতে সোশ্যাল মিডিয়া এবং বিনোদন প্ল্যাটফর্মগুলোর জন্য নতুন নীতি তৈরির দিকে পরিচালিত করতে পারে।
রানবীর আল্লাবাদিয়া’র এই মন্তব্য শুধু তার ক্যারিয়ারকেই নয়, পুরো সোশ্যাল মিডিয়া এবং কমেডি জগতকেই প্রশ্নের মুখে দাঁড় করিয়ে দিয়েছে। বিতর্কের এই গতি দেখে মনে হচ্ছে, এই কন্ট্রোভার্সি শুধুমাত্র আইনি বা সামাজিক বিতর্ক পর্যন্ত সীমাবদ্ধ থাকবে না, বরং এটি একটি বৃহত্তর সংস্কৃতিগত পরিবর্তনের দিকে নিয়ে যেতে পারে। Ref- news18.com