Last Updated on January 13, 2025 by কর্মসংস্থান ব্যুরো
পাইলট হওয়া অনেকের জন্য স্বপ্নের মতো। আকাশে উড়ে পৃথিবীকে নতুন দৃষ্টিকোণ থেকে দেখার সুযোগ যে কাউকে আকৃষ্ট করতে পারে। তবে এই স্বপ্নকে বাস্তবে পরিণত করতে হলে, আপনাকে একটি নির্দিষ্ট পথে এগিয়ে যেতে হবে। ভারতীয় বিমান বাহিনী বা বেসরকারি বিমান সংস্থার পাইলট হতে হলে, প্রথমে আপনাকে কিছু যোগ্যতা অর্জন করতে হবে। আজকের এই বিশদ গাইডে, আমরা জানাবো কিভাবে ১২ তম পরবর্তী পাইলট হওয়া সম্ভব।
পাইলটের বিভিন্ন ধরনের চাকরি
পাইলট হওয়ার পথে প্রথমেই আপনাকে বুঝতে হবে, পাইলটের বিভিন্ন ধরনের চাকরি রয়েছে।
১. কমার্শিয়াল পাইলট: যে পাইলটরা যাত্রী বা মালবাহী বিমান চালান।
২. প্রাইভেট পাইলট: যারা ব্যক্তিগত প্রয়োজনে বিমান চালান।
৩. মিলিটারি পাইলট: যারা সেনাবাহিনীর জন্য বিমান চালান।
৪. কর্পোরেট পাইলট: যারা ব্যবসায়িক উদ্দেশ্যে বিমান চালান।
৫. ফ্লাইট ইনস্ট্রাক্টর: যারা অন্যদের পাইলটিং শিখান।
পাইলট হতে হলে কি যোগ্যতা প্রয়োজন?
পাইলট হওয়ার জন্য আপনাকে প্রথমে কিছু শর্ত পূর্ণ করতে হবে। ভারতের পাইলট হওয়ার জন্য যেসব শর্ত পূর্ণ করতে হবে তা হলো:
- বয়স: ১৭ বছর বা তার বেশি হতে হবে।
- শিক্ষাগত যোগ্যতা: ১২ তম শ্রেণিতে ফিজিক্স এবং ম্যাথ বিষয় থাকতে হবে।
- শারীরিক যোগ্যতা: DGCA (ডিরেক্টরেট জেনারেল অফ সিভিল এভিয়েশন)-এর অনুমোদিত চিকিৎসক থেকে দ্বিতীয় শ্রেণির মেডিকেল সার্টিফিকেট প্রয়োজন।
শারীরিক যোগ্যতা: পুরুষ ও মহিলাদের জন্য
বিবরণ | পুরুষ | মহিলা |
---|---|---|
অন্তত উচ্চতা | ৫ ফুট ৫ ইঞ্চি (১৬৫ সেমি) | ৫ ফুট ৫ ইঞ্চি (১৬৫ সেমি) |
বডি ম্যাস ইনডেক্স (BMI) | ১৮.৫ – ২৫ | ১৮.৫ – ২৫ |
দৃষ্টি | ৬/৬ দৃষ্টি প্রতিটি চোখে | ৬/৬ দৃষ্টি প্রতিটি চোখে |
রঙের দৃষ্টি | স্বাভাবিক রঙের দৃষ্টি | স্বাভাবিক রঙের দৃষ্টি |
শ্রবণ ক্ষমতা | শ্রবণ শক্তি ভালো, ২০ ডেসিবেল বা তার কম শ্রবণ ক্ষতি | শ্রবণ শক্তি ভালো, ২০ ডেসিবেল বা তার কম শ্রবণ ক্ষতি |
সাধারণ শারীরিক সুস্থতা | শারীরিকভাবে সুস্থ, কোনো বড় স্বাস্থ্য সমস্যা নেই | শারীরিকভাবে সুস্থ, কোনো বড় স্বাস্থ্য সমস্যা নেই |
পাইলট হওয়ার প্রক্রিয়া
পাইলট হওয়ার জন্য প্রথমে একটি প্রশিক্ষণ প্রোগ্রামে ভর্তি হতে হবে। ভারতের বিভিন্ন বিমান প্রশিক্ষণ স্কুলে এই প্রশিক্ষণ হয়। এখানে যে প্রক্রিয়াগুলি সাধারণত অনুসরণ করা হয় তা হলো:
- এন্ট্রান্স পরীক্ষা: সাধারণত ম্যাথ, ফিজিক্স এবং ইংরেজি সম্পর্কে আপনার জ্ঞান পরীক্ষা করা হয়।
- সাক্ষাৎকার: এই অংশে আপনার ইচ্ছাশক্তি, যোগাযোগ ক্ষমতা এবং ব্যক্তিত্ব মূল্যায়ন করা হয়।
- মেডিকেল পরীক্ষা: এই পরীক্ষায় শারীরিক ও মানসিক অবস্থার মূল্যায়ন করা হয়।
প্রশিক্ষণ শুরু করা
১. DGCA মেডিকেল পরীক্ষা পাস করুন: এটি একটি পূর্ণাঙ্গ মেডিকেল পরীক্ষা যা আপনাকে আকাশে উড়তে সক্ষম কিনা তা মূল্যায়ন করে।
২. ফ্লাইট স্কুল নির্বাচন করুন: একটি ভালো ফ্লাইট স্কুল নির্বাচন করুন। এখানে প্রশিক্ষণের সময়কাল সাধারণত ১২-১৮ মাস।
৩. পাইলট প্রশিক্ষণ প্রোগ্রামে ভর্তি হন: এখানে তত্ত্ব এবং ফ্লাইটের অনুশীলন শেখানো হবে।
পাইলট লাইসেন্স প্রাপ্তির প্রক্রিয়া
পাইলট হতে হলে, আপনাকে কয়েকটি ধাপে প্রশিক্ষণ নিতে হবে এবং তারপর পাইলট লাইসেন্স পেতে হবে।
১. প্রাইভেট পাইলট লাইসেন্স (PPL): এটি প্রথম লাইসেন্স যা আপনাকে একক ইঞ্জিন বিমান চালানোর অনুমতি দেয়।
২. কমার্শিয়াল পাইলট লাইসেন্স (CPL): এটি পাইলটকে বিমান চালানোর জন্য পেশাদারভাবে কাজ করার অনুমতি দেয়।
৩. মাল্টি-ইঞ্জিন ইনস্ট্রুমেন্ট রেটিং (MEIR): এটি আপনাকে মাল্টি-ইঞ্জিন বিমান চালানোর জন্য অনুমতি দেয়।
ভারতীয় বিমান বাহিনীতে পাইলট হওয়ার পথ
ভারতীয় বিমান বাহিনীতে পাইলট হতে চাইলে, আপনি জাতীয় প্রতিরক্ষা একাডেমি (NDA) বা কম্বাইনড ডিফেন্স সার্ভিস (CDS) পরীক্ষার মাধ্যমে যোগ দিতে পারেন। ১২ তম পরবর্তী পাইলট হওয়ার জন্য এনডিএ (NDA) পরীক্ষা সবচেয়ে ভালো উপায়।
পাইলট হওয়ার সুবিধা
পাইলট হওয়ার অনেক সুবিধা রয়েছে।
- উত্তেজনাপূর্ণ ক্যারিয়ার: আকাশে উড়ে পৃথিবী দেখার অভিজ্ঞতা।
- ভালো বেতন ও সুযোগ: বিমান সংস্থাগুলি বেশ ভালো বেতন প্রদান করে।
- ভ্রমণের সুযোগ: বিশ্বব্যাপী ভ্রমণের সুযোগ।
পাইলট হওয়ার জন্য ধৈর্য, নিষ্ঠা এবং প্রস্তুতি প্রয়োজন। আপনি যদি ১২ তম পরবর্তী পাইলট হতে চান, তবে উপরের পদক্ষেপগুলি অনুসরণ করে আপনার স্বপ্ন পূরণ করতে পারবেন। এই কর্মমুখী ক্যারিয়ার আপনাকে শুধু শখের পূর্ণতা দিতে নয়, বড় অর্থনৈতিক লাভও এনে দিতে পারে।
FAQ :
পাইলট হতে হলে আপনাকে ১২ তম শ্রেণিতে ফিজিক্স এবং ম্যাথ থাকতে হবে এবং শারীরিকভাবে সুস্থ হতে হবে।
এনডিএ বা সিডিএস পরীক্ষার মাধ্যমে ভারতীয় বিমান বাহিনীতে পাইলট হতে পারেন।
পাইলট প্রশিক্ষণ পেতে সাধারণত ৩৫-৪৫ লক্ষ টাকা খরচ হয়।