Last Updated on February 6, 2025 by কর্মসংস্থান ব্যুরো
অজিত কুমারের সর্বশেষ অ্যাকশন থ্রিলার সিনেমা, ৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ তারিখে মুক্তি পেয়েছে। মাগিজ থিরুমেনি পরিচালিত এই সিনেমায় ত্রিশা কৃষ্ণন এবং আরজুন সরজা গুরুত্বপূর্ণ চরিত্রে অভিনয় করেছেন। এই সিনেমা ১৯৯৭ সালের হলিউড সিনেমা ব্রেকডাউন এর রিমেক, এবং এর কাহিনী একটি বিপজ্জনক মিশনে স্ত্রীকে বাঁচানোর জন্য একজন পুরুষের সংগ্রামের উপর ভিত্তি করে গড়ে উঠেছে। তবে, সিনেমাটি সাসপেন্স এবং অ্যাকশন দিয়ে দর্শকদের আকৃষ্ট করার চেষ্টা করলেও, কিছু জায়গায় ধীর গতি এবং সঙ্গীতের অভাব কিছুটা হতাশাজনক মনে হয়েছে।
গল্প এবং প্লট
ভিডামুয়র্চি সিনেমার কাহিনী আরজুন (অজিত কুমার) নামক এক পুরুষের জীবনকে কেন্দ্র করে, যার স্ত্রী কায়াল (ত্রিশা কৃষ্ণন) আযারবাইজানে রহস্যজনকভাবে অপহৃত হয়। আরজুন এক তীব্র মিশনে নেমে পড়ে তার স্ত্রীর জীবন বাঁচানোর জন্য। গল্পটি একটি রেস-অ্যাগেইনস্ট-টাইম থ্রিলার, যেখানে আরজুন নানা প্রতিকূলতা এবং বাধার সম্মুখীন হয়ে, একের পর এক রহস্য উন্মোচন করতে থাকে। তবে, সিনেমার ধীর গতি এবং আবেগের অভাব গল্পের কিছু জায়গায় দুর্বলতা সৃষ্টি করেছে।
কী কাজ করেছে:
- অজিত কুমারের পারফরম্যান্স: অজিত কুমারের অভিনয় সিনেমার সবচেয়ে শক্তিশালী দিক। তিনি আরজুন চরিত্রে এক ব্যক্তিগত যুদ্ধে লিপ্ত, যেখানে তার স্ত্রীর জীবন বাঁচানোর জন্য তার জীবন বিপন্ন হয়ে পড়ে। চরিত্রটির মধ্যে প্রেম এবং হতাশার মিশ্রণ আছে, এবং অজিত কুমারের প্রেজেন্স একে আরও বাস্তবধর্মী করেছে। বিশেষ করে তার অ্যাকশন দৃশ্যে তার পারফরম্যান্স দর্শকদের মুগ্ধ করেছে। তবে, সিনেমার অন্য দিকগুলোর চেয়ে তার উপস্থিতি অনেক বেশি প্রভাবশালী।
- স্টাইলিশ সিনেমাটোগ্রাফি: সিনেমার সিনেমাটোগ্রাফি বেশ প্রশংসনীয়। ওম প্রকাশ এর ক্যামেরার কাজ এবং আযারবাইজানের মনোমুগ্ধকর প্রাকৃতিক দৃশ্যাবলী সিনেমার অঙ্গ হয়ে উঠেছে। এই দৃশ্যগুলি সিনেমার অ্যাটমোস্ফিয়ারকে আরও শক্তিশালী করেছে। বিশেষত, আযারবাইজানের অপূর্ব দৃশ্যগুলো সিনেমাটিকে আরও চিত্তাকর্ষক এবং সুন্দর করে তুলেছে। ক্যামেরার কাজের মাধ্যমে পরিচালক উত্তেজনাপূর্ণ পরিবেশ সৃষ্টি করতে সক্ষম হয়েছেন, যা সিনেমার টানটান উত্তেজনাকে বৃদ্ধি করেছে।
- অ্যাকশন এবং সাসপেন্স: সিনেমায় কিছু চমকপ্রদ টুইস্ট এবং সাসপেন্স রয়েছে, বিশেষ করে দ্বিতীয় ভাগে। কিছু দৃশ্যে উত্তেজনা বাড়ানোর জন্য সাসপেন্স এবং টুইস্টগুলো বেশ কার্যকর হয়েছে, যা দর্শকদের আরও আগ্রহী করে তুলেছে। এসব টুইস্টের মাধ্যমে সিনেমার কাহিনীকে জটিল করা হয়েছে, যা একজন থ্রিলার সিনেমায় খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
কী কাজ করেনি:
- ধীর গতি: সিনেমার সবচেয়ে বড় সমস্যা ছিল এর ধীর গতি। সিনেমার প্রথম অর্ধাংশ অনেকটাই স্লো, যেখানে কাহিনী ধীরে ধীরে গড়ে ওঠে। এতে করে কিছু দর্শক সিনেমার প্রতি আগ্রহ হারিয়ে ফেলেছেন। দ্বিতীয় অর্ধাংশে কিছুটা গতি থাকলেও, সামগ্রিকভাবে সিনেমার গতি কিছুটা দুর্বল ছিল। এই ধীর গতি সিনেমার সাসপেন্স এবং উত্তেজনা তৈরি করতে বাধা সৃষ্টি করেছে।
- অধিক বাণিজ্যিক উপাদান না থাকা: পরিচালক মাগিজ থিরুমেনি সিনেমাটিকে খুব একটা বাণিজ্যিক উপাদান দিয়ে পূর্ণ করেননি। অনেকেই মনে করছেন, সিনেমার স্ক্রীনপ্লে যদি আরো শক্তিশালী এবং নাটকীয়তা দিয়ে সাজানো হতো, তবে এটি আরও আকর্ষণীয় হতে পারত। কিছু কমার্শিয়াল উপাদান যেমন অতিরিক্ত নাটকীয়তা, সাসপেন্স এবং মোমেন্টস প্রয়োজন ছিল, যা সিনেমাকে আরও দর্শকপ্রিয় এবং উপভোগ্য করতে সাহায্য করত।
- সঙ্গীতের দুর্বলতা: অনিরুদ্ধ রবিশ্চন্দর এর সঙ্গীত বেশ জনপ্রিয়, তবে ভিডামুয়র্চি সিনেমাতে সঙ্গীতের অবদান খুব একটা উল্লেখযোগ্য ছিল না। সিনেমার আবেগপূর্ণ মুহূর্ত এবং সাসপেন্স তৈরি করতে সঙ্গীতের প্রয়োজন ছিল, তবে সেটি পুরোপুরি সফল হয়নি। সঙ্গীতের অভাব সিনেমার উত্তেজনা এবং আবেগকে সীমাবদ্ধ করেছে।
দর্শক প্রতিক্রিয়া:
Vidamuyarchi সিনেমা সোশ্যাল মিডিয়ায় মিশ্র প্রতিক্রিয়া পেয়েছে। অনেক দর্শক, বিশেষত অজিত কুমারের ভক্তরা, সিনেমাটিকে তার কমব্যাক হিসেবে প্রশংসা করেছেন। এক ব্যবহারকারী লিখেছেন, “স্পষ্ট বিজয় #ভিডামুয়র্চি… কি অসাধারণ কমব্যাক, স্যার!” অন্যরা সিনেমার সাসপেন্স এবং অ্যাকশন দৃশ্য প্রশংসা করেছেন। তবে কিছু দর্শক সিনেমার ধীর গতি এবং আবেগের অভাব নিয়ে নেতিবাচক মন্তব্য করেছেন। একজন ব্যবহারকারী লিখেছেন, “অজিতের স্ক্রীন প্রেজেন্স খুব ভালো। অজিত-ত্রিশার প্রেমের অংশ দুর্বল। আরজুন এবং রেজিনা ভালো। সঙ্গীত সাধারণ। দুর্বল গল্প, কোনো আবেগ নেই, নাটকীয়তা নেই।”